ছাঁচে ঢালা তাম্রমুদ্রা
মঙ্গলকোটের অন্যতম প্রত্নরত্ন সংগ্রাহক সেখ আসরাফ আলি।এখানকার বিভিন্ন প্রত্নস্থল থেকে তিনি বিবিধ পুরা দ্রব্য সংগ্রহ করেছেন। যেমন তাম্রাশ্মীয় যুগ থেকে ঐতিহাসিকযুগের নানা ধরনের কৌলাল অর্থাৎ মাটির জিনিষপত্র ,টেরাকোটা ফলক ,মাটির সিল. বিডস, হাতির দাঁত ও পাথরের নানা শৌখিন দ্রব্যাদি এবং মুদ্রা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু ছাঁচে ঢালা তাম্রমুদ্রা অর্থাৎ কপার কাস্ট কয়েন্স।আশরাফের সংগ্রহটি বেশ সমৃদ্ধ।বর্গাকার মুদ্রা ৬৭ টি।আয়তকার মুদ্রা ২২ টি এবং বিচিত্র আকৃতির ১৩টি।
ঐতিহাসিকেরা মনে করেন ছাঁচে ঢালা তাম্রমুদ্রা প্রধানত মৌর্য-শুঙ্গ-কুষাণ-গুপ্তযুগে চালু ছিল।এই মুদ্রাগুলিতে কোন লিপি নেই।নেই কোন রাজার নাম বা দেব দেবির প্রতিকৃতি।বরং তৎকালীন লোকজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে ।মুদ্রাগুলিতে পড়েছে কৃষিভিত্তিক সমাজ জীবনের ছাপ।মুদ্রায় বেশকিছু জীব-জন্তুর প্রতিকৃতির ছাপ আছে।যেমন হাতি,ষাঁড়,ঘোড়া,সাপ উট ইত্যাদি।কিছু মদ্রায় রয়েছে তৎকালীন যুগে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের ছাপ বা সাংকেতিক চিহ্ন।যেমন ক্রশ চিহ্ন,স্তূপ , স্বস্তিক চিহ্ন,যজ্ঞবেদী,রেলিং দেওয়া গাছ,বা বোধি বৃক্ষ ইত্যাদি।আরও নানা ধরনের দুর্বোধ্য সাংকেতিক চিহ্ন মুদ্রাগুলিতে দেখা যায়।এর সঙ্গে অদ্ভুত মিল রয়েছে গ্রামগঞ্জে ঘরের দরজায় বা মন্দিরে আঁকা সাংকেতিক চিহ্নগুলির সঙ্গে ।বিশেষজ্ঞরা মনে করেন মুদ্রাগুলি মাটির ছাঁচে গলিত তামা ঢেলে বানানো হতো।আসরাফের সংগৃহীত মুদ্রাগুলির গড় ওজন ৩.৫৭ গ্রাম।পশ্চিমবঙ্গের নানা স্থান থেকে এই ধরনের মুদ্রা প্রচুর পাওয়া গেছে যেমন চন্দ্রকেতুগড়,বোড়াল,পোখরানা ইত্র্যাদি,।
কাটোয়ার মঙ্গলকোট ছাড়াও কপারকাস্ট কয়েন মিলেছে কেতুগ্রামের আনখোনার মাঝিডাঙ্গা থেকে।
সাংকেতিক চিহ্নটা দেখুন |
No comments:
Post a Comment